‘ছাতা(chhata)’:-
চুরি; নিঃসন্দেহে সমাজে নিন্দনীয় কাজ। কিন্তু চুরি ছাড়াও আর যা যা নিন্দনীয় কাজ হতে পারে, সমস্তটাই ইচ্ছাকৃত ভাবে বা নেহাত বাধ্য হয়ে আমরা করলে তার জন্য নিজের মনকেই নানা অজুহাত দিয়ে বুঝিয়ে দিই। ওই কাজটা না করলে আমাকে কিন্তু মহা সমস্যায় পড়তে হতো; ওই তো একবার, একটু আধটু দুষ্কর্ম তো সবার জীবনেই থাকে, নইলে আবার লোকে ক্যাবলা বলবে! আর সবচেয়ে বড় কথা, কিছু মানুষের চোখে ছোটো খাটো দুষ্কর্ম অপরাধ নয়, অ্যাডভেঞ্চার।
কিন্তু আজকের যুগে একটা সৎ, ভদ্রমানুষ যদি নিরুপায় হয়ে পরিস্থিতির চাপে যদি একটা গর্হিত কাজ করে? এই যেমন ধরুন প্রবল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে, আপনি একটি দোকানে ঢোকার আগে নিজের ছাতা(chhata) বাইরে রাখলেন। বেরিয়ে দেখলেন আপনার ছাতা অন্য লোকে চুরি করেছে। পড়ে রয়েছে অন্য রঙের একটি অপরিচিত ছাতা। বৃষ্টির চাপে ভদ্রলোক ছাতাটা(chhata) চুরিই করলেন। কিন্তু তারপর? নিজের মনে কি চলতে থাকে অবিরাম? এই প্রেক্ষাপট নিয়েই ছোট্ট এক গল্প সাজিয়েছেন পরিচালক সুজিত পাইন।

সিনেমায় রয়েছেন অম্বরিশ ভট্টাচার্য, রাজন্য মিত্র। সাথে ঈশানা মিত্র ও পাপিয়া দেবরাজন। খুব অল্প পরিসর, অভিনয় প্রদর্শনের সেরকম জায়গা ছিল না। দর্শকের দেখতে হয়তো একটু মেলোড্রামাটিক মনে হবে, কিন্তু মনে রাখা দরকার এই সিনেমা তৈরি হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে, পিকচার কোয়ালিটি দেখলেই তা বোঝা যায়। মেকিং এও এর যথেষ্ট প্রভাব দেখা যায়। তার মধ্যেও পাপিয়া দেবরাজন নিজের দৃশ্যে অতিরিক্ত অভিনয় করেননি, তাই কোথাও বিষয় টা বাড়াবাড়ি মনে হয়নি।
একটা কথা বলতেই হয় আমাদের এই ছোট্ট ভুল গুলো, যেগুলো আমাদের মস্তিষ্কের ডিফেন্স মেকানিজম আমাদেরকে প্রায় ভুলিয়েই দেয়, সেই ছোট্ট পাপ গুলোতে, অন্য মানুষের যে কত অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে তার কোনো ধারণাই থাকে না অনেক সময়। এই ছবি তাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে, ভবিষ্যতে আপনি নেহাত পরিস্থিতির শিকার হয়েও আরেকবার বিবেচনা করে দেখবেন আপনার ছোট্ট ভুলে অজান্তে হলেও অন্য মানুষের যে বড়ো ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, তার জন্য আমাদের বিবেক আমাদের ক্ষমা করে দিতে পারবে তো?