Chupkotha:
সিনেমা হিসেবে নয়, pandemic এর বাস্তব anecdote হয়ে থাকবে addatimes শর্টফিল্ম ‘চুপকথা’(Chupkotha) পৃথিবী জুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ছোটো বড়ো সমস্ত ক্ষেত্রই প্রভাবিত। সারা বিশ্বেই সিনেমা নতুন বদল নিচ্ছে। আগের বছরের pandemic সিনেমায় এক নতুন genre তৈরি করেছে, যাকে আমরা সহজ ভাষায় COVID film বলছি। সাধারণত দেখা যায়, এই ধরনের সিনেমা দুরকম ভাবে গল্প শোনায়, এক ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথোপকথন চালাচ্ছে, এবং অনলাইন পর্দায় উপস্থিত থেকে শারীরিক দূরত্ব দুর করার চেষ্টা করছে।
দ্বিতীয় হলো একটি বাড়িতে লকডাউন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সদস্যের প্রতিক্রিয়া, প্রতিনিয়ত উদ্বেগ, অদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাদের সমস্যা, তাদের মধ্যেকার সম্পর্কের ওঠা পড়া এই সমস্ত কিছুকে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে। গত দেড় বছরে কমবেশি আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতেই এই দ্বিতীয় ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা এই ধরনের ছবি দেখি কারণ প্রত্যেক বাড়ি আলাদা এক গল্প বলে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যার সাথে এখনো আমরা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারিনি। তাই বেশির ভাগ গল্পেই এক অনিশ্চয়তা, এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

Addatimes এর নতুন শর্টফিল্ম এ এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে খুব যত্ন সহকারে তৈরি করা হয়েছে।ফিল্মে মূলত তিনটি চরিত্র, স্বামী, স্ত্রী ও তাদের চার বছরের মেয়ে। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন রাহুল ব্যানার্জী এবং বাসবদত্তা চ্যাটার্জী। সেই সাথে শিশুচরিত্রে অভিনয় করেছে কিয়ানা মুখার্জী।
কর্মরত স্বামী স্ত্রী দম্পতির একমাত্র সন্তান যে বলতে বা শুনতে অক্ষম। তাই এমন ধরনের বাচ্চাকে সবসময় একজন আগলে রাখে, এবং বাবা মার অবর্তমানে তার নিজস্ব nanny মেয়েটির খেয়াল নেয়। কিন্তু অপ্রত্যাশিত মহামারীতে পুরো পরিবার ঘরে আটকা পড়ে, যেখানে বাচ্চার খেয়াল রাখা টা একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ একাধারে ঘরে বসে কর্মক্ষেত্র সামলাতে গিয়ে, কাজ ও অবসরের সময়ের মধ্যের ফারাক মুছে গিয়েছে। তাই সরল শিশুটি অনেকসময়ই নিজেকে অবহেলিত ভাবছে। সেই সাথে যদি দুই দম্পতি একসাথে মহামারীর কবলে পড়ে? সন্তানের কথা ভেবে হয়তো নিজেদের সরিয়ে নিলেও, সন্তান নিজেকে একা খুঁজে পেয়ে মানসিক যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছে যা ভবিষ্যতে তার মনে বিরাট বড় ছাপ ফেলে দেবে।
পরিচালক সৌম্য সেনগুপ্ত প্রথম থেকেই একটার পর একটা গুটি সাজিয়ে বাবা মা ও ছোট্ট মেয়েটির মধ্যেকার সংযোগ স্থাপনের সমস্ত সূত্র ছিন্ন করেছেন। একদিকে যেমন মেয়েটি, বিশেষ ভাবে সক্ষম হওয়ায় আশে পাশের মানুষের সাথে মন খুলে নিজের ভাব প্রকাশ করতে পারে না, আবার বাবা মারও মেয়েকে নিজের কথা বোঝাতে না পারার চাপা কষ্ট সব সময় সামলে রাখতে পারে না। এমন অবস্থায় যখন রোগের কারণে বাবা মা ও মেয়ে আলাদা ঘরে বন্দী, আর শিশুটির দমবন্ধ করা মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে বাইরের পরিবেশ টাও claustrophobic হয়ে ওঠে, তখনই শুরু হয় তার অস্থিরতা। আমাদের ভয় হয় এই মেয়েটির অবস্থা হিন্দি ছবি ‘পিহু’ র মত হবে না তো? তবে না।
আগেই বলেছি, এই গল্পের ঘটনা অত্যন্ত বাস্তবের মাটিতে জুড়ে, যার সাথে আপনি নিজেকে মিলিয়ে নিতে পারবেন। এই শর্ট ফিল্মটির ঘটনা গুলো দিয়ে বেশির ভাগ টাই শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যেমন নিজেকে সাবধানে রাখুন, অসুস্থ হলে আপনার সন্তানের কি হবে, বা এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী হিসেবে সংকোচ সরিয়ে পাশে দাঁড়ান। সবশেষে ‘চুপকথা’ কে বলা যায় একটি অত্যন্ত প্রাথমিক COVID Film, যার গুরুত্ব সিনেমা হিসেবে না হয়ে, বর্তমান মহামারী পরিস্থিতির একটি কাল্পনিক অথচ চরম বাস্তব সাক্ষ্য হিসেবে বিদ্যমান।