হইচই(Hoichoi) এর ‘Boyfriends and Girlfriends’ রিভিউ:
অবশেষে! অবশেষে অনেক দিন পর হইচই(Hoichoi) তে, না শুধু হইচইHoichoi)কেনো, সমস্ত বাংলা ওয়েব জগতে এপার বাংলা থেকে অনেক দিন পর প্রশংসা যোগ্য, উপভোগ্য একটি সিরিজ দেখতে পাওয়া গেলো। শুরু থেকেই এই সিরিজ নিয়ে হইচই এর প্রচারবিমুখতা, প্ল্যাটফর্মে আসার মাত্র পাঁচদিন আগে, ট্রেলার প্রকাশ, ব্যাপারটা খটমট লাগছিল। কিন্তু এই উপেক্ষার কোনো কারণ নেই। প্রথমত, চেনা মুখের ছড়াছড়ি, ঈশা সাহা, আদৃজা রায়, রিদ্ধি সেন, ঋতব্রত মুখার্জী, উজান চ্যাটার্জী, কে নেই। আর সাবজেক্ট খুব সহজ, যৌবনের বিভিন্ন সম্পর্কের গল্প। এই ওয়াই-জেন রম কম যে বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে, সেটা পরিষ্কার। একটা জিনিস প্রথম থেকে বড়ই অদ্ভুত লাগছিল।
হইচই(Hoichoi) সিরিজে অভিনেতাদের বিপরীতে যে অভিনেত্রীরা রয়েছেন তারা অভিনেতাদের থেকে বয়সে যথেষ্ট বড়। তাই pairing কিভাবে হতে পারে, ভেবে অবাক লাগছিল। কিন্তু সিরিজ দেখে মনে হচ্ছে, এই কাস্টিং এর প্রয়োজন ছিল। এখানে মহিলাত্রয় কে তুলনায় বেশি পরিণত বয়স্ক দেখানো হয়েছে, যারা রিলেশনশিপ এ ম্যাচিওরিটি দেখিয়েছে। আর অন্য দিকে যেখানে, বলিউড হিরোরা পঞ্চাশ ষাট বছর বয়সে তিরিশ বছরের চরিত্রে অভিনয় করছেন, সেখানে নায়িকাদের পিছিয়ে রাখা যায় না। আর এমনিতেও ঈশা সাহার চরিত্রের বয়স নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছুই বলেনি।

প্রথমেই বলে রাখতে হয় এই হইচই(Hoichoi) সিরিজ কে আলাদা করে কোনো লিস্টে রাখতে পারবেন না। Hoichoi সিরিজের কোনো এস্থেটিক মূল্য নেই, এবং নির্মাতারা তা নিয়ে মাথাও ঘামাননি। এই সিরিজের একক উদ্দেশ্য হলো, বিনোদন, এন্টারটেইনমেন্ট। জোর করে না হাসিয়ে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কমেডি trope না রেখে, শুধু মাত্র স্ক্রিপ্টের জোরে কিভাবে হাসি ফোটানো যায় তা দেখিয়েছে এই ওয়েব সিরিজ। আপনি কিন্তু পেট খিল ধরিয়ে হাসবেন না, এটা অনেকটা গুড ফিলিংয়ের মত। এই সিরিজ প্লেজার ওয়াচ। ছোটো দৈর্ঘ্য, গুছিয়ে না বসেও দেখে নেওয়া যায়।
আজকের আধুনিক সময়ে সম্পর্কের জটিল কাটাকুটি গুলো সাজিয়ে দিয়েছেন, লেখক ও পরিচালক। যদি এই চরিত্র গুলোর স্রষ্টা মৈনাক ভৌমিক একা হন তো তাকে বাহবা দিতেই হবে। ছয়টি চরিত্রের মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রেম জীবনে যে যে চড়াই উতরাই আসে, যার বেশিরভাগই আমাদের কারণে আরো জটিল হয়ে ওঠে, তার সমস্তটা দেখিয়েছেন লেখক। পরিচালক শুভঙ্কর পালের কাঁধে ছিল সঠিক ভাবে নির্বাহের দায়িত্ব, এবং তিনি সেই কাজ যথাযথ ভাবে পালন করেছেন। কোনো চরিত্রকেই নিজের কৃতকর্মের জন্য বিচার করার সুযোগ দেন না পরিচালক, বরং প্রশংসনীয় ভাবে মুক্তমনে আর পাঁচটা মানুষের থেকে ব্যতিক্রম সিদ্ধান্ত নেওয়া মানুষটাকে সমালোচনা, বিচার, কটূক্তি না করে অত্যন্ত সহজ ভাবে কিভাবে মেনে নিতে হয় তা দেখিয়েছে।
কোনো রকম উৎসব নেই, কোনো জোর করে দর্শককে শিক্ষাদান নেই, থইথই আবেগে ভাসাও নেই। সহজ সরল ভাবে প্রত্যেকটি আলাদা ব্যক্তির সিদ্ধান্ত, ব্যক্তিস্বাধীনতা কে সম্মান, স্বাগত জানানো। তবে এটাও দেখানো হয়েছে যে আমাদের সম্পর্কে আমাদের প্রতিক্রিয়া গুলো অনেক সময়েই বাইরের ইনফ্লুয়েন্স থেকে প্রভাবিত হয়। আমাদের অতীতের দুঃখ, অপ্রাপ্তি, আমাদের ডিফেন্স মেকানিজম বর্তমান সম্পর্ক গুলোকে কতটা ক্ষতি করে। এই সিরিজের সম্পর্ক গুলো গতানুগতিক ছবির মত অমর প্রেমের গল্প বলছে না। কিঞ্চিৎ ডকুমেন্টারির ছোঁয়া, চরিত্রদের সময়ে সময়ে ফোর্থ ওয়াল ব্রেক করা, এই সবের মধ্যে দিয়ে একটা ব্যাপার খুব স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এই গুলো কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের ইউথদের সম্পর্কের স্ট্যাটাস এর মত। তাই এরা দোষ ত্রুটি বিহীন মহাপুরুষ নন।
এরা সম্পর্কের মধ্যে থেকেও প্রাক্তনের কথা ভাবে, দীর্ঘদিনের সম্পর্কে থেকেও অন্য সঙ্গীর কাছে স্বস্তি খুঁজে বেড়ায়, এক সপ্তাহের পরিচয়ে সম্পর্কে জড়ায়, নিজের পছন্দ, নিজের ইচ্ছা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, ইত্যাদি ইত্যাদি। অভিনেতাদের নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। এই রম কম আগেই বললাম সহজ ভাবে উপভোগ্য বস্তু, তাই অভিনেতারা ও খুব আলাদা করে কোনো ইনপুট দেননি। বাজেটের একটা অভাব বোঝা যায়, কিন্তু সেটা আপনার দেখার পথে কোনো বাধা তৈরি করেনি। এক লোকেশনে, স্টিল ফ্রেমে আরামসে কাজ উতরে গেছে। বরং বলতে হয়, চিত্রনাট্য, আর অভিনয় সেই দিকে খুব একটা তাকাতেই দেয়নি।
একটিই গান, ‘উমা’ ছবির ‘হারিয়ে যাওয়ার গান’ বারবার ব্যবহার হয়েছে, এবং ঠিকঠাক ব্যবহার হয়েছে, আধুনিক জীবনে প্রত্যেক মানুষের কমপ্লিমেন্টারি একাকীত্ব, এবং মন খারাপ দুর করার জন্য কাঙ্ক্ষিত মেসিহার অপেক্ষা, বোঝানোর জন্য গানটি ঠিকথাক। একটা স্পয়লার বাধ্য হয়ে দিতেই হচ্ছে। হইচই এর জোর করে সিরিজকে টেনে দ্বিতীয় সিজনে টেনে নিয়ে যাওয়ার ব্যারাম এখানে আর দেখা যায়নি, ঈশ্বরের কৃপায়। বরং মনে হচ্ছিল, গল্প যেখানে দাড়িয়ে, সেখানে দ্বিতীয় সিজনের জন্য অপেক্ষা করানো যেতেই পারে। এই ব্রোমান্স ওয়াই জেন রম কম আপনার ভালো লাগবে সন্দেহ নেই। হিন্দি ওয়েব সিরিজের স্বাধীন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মত করে ইউথ কানেক্টেড, ইউথ এর কাছে আবেদন করা এই সিরিজ যদি হইচই এর স্বতঃ প্রণোদিত স্ট্র্যাটেজি হয়, তো বলতেই হবে এই সিরিজ ব্যাটে বলে ছক্কা।
On M.Y. Opinion, ‘Boyfriends and Girlfriends’ is 71% OK, 57% OP

অভিনেতাদের নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। এই রম কম আগেই বললাম সহজ ভাবে উপভোগ্য বস্তু, তাই অভিনেতারা ও খুব আলাদা করে কোনো ইনপুট দেননি। বাজেটের একটা অভাব বোঝা যায়, কিন্তু সেটা আপনার দেখার পথে কোনো বাধা তৈরি করেনি। এক লোকেশনে, স্টিল ফ্রেমে আরামসে কাজ উতরে গেছে। বরং বলতে হয়, চিত্রনাট্য, আর অভিনয় সেই দিকে খুব একটা তাকাতেই দেয়নি। একটিই গান, ‘উমা’ ছবির ‘হারিয়ে যাওয়ার গান’ বারবার ব্যবহার হয়েছে, এবং ঠিকঠাক ব্যবহার হয়েছে, আধুনিক জীবনে প্রত্যেক মানুষের কমপ্লিমেন্টারি একাকীত্ব, এবং মন খারাপ দুর করার জন্য কাঙ্ক্ষিত মেসিহার অপেক্ষা, বোঝানোর জন্য গানটি ঠিকথাক। একটা স্পয়লার বাধ্য হয়ে দিতেই হচ্ছে।
হইচই(Hoichoi) এর জোর করে সিরিজকে টেনে দ্বিতীয় সিজনে টেনে নিয়ে যাওয়ার ব্যারাম এখানে আর দেখা যায়নি, ঈশ্বরের কৃপায়। বরং মনে হচ্ছিল, গল্প যেখানে দাড়িয়ে, সেখানে দ্বিতীয় সিজনের জন্য অপেক্ষা করানো যেতেই পারে। এই ব্রোমান্স ওয়াই জেন রম কম আপনার ভালো লাগবে সন্দেহ নেই। হিন্দি ওয়েব সিরিজের স্বাধীন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মত করে ইউথ কানেক্টেড, ইউথ এর কাছে আবেদন করা এই সিরিজ যদি হইচই(Hoichoi) এর স্বতঃ প্রণোদিত স্ট্র্যাটেজি হয়, তো বলতেই হবে এই হইচই(Hoichoi) সিরিজ ব্যাটে বলে ছক্কা। On M.Y. Opinion, ‘Boyfriends and Girlfriends’ is 71% OK, 57% OP