Social Media:
নাহ্, শুধু এই দৃষ্টি দিয়েই আমরা চূর্নী গাঙ্গুলির তারিখ দেখব না। তিন মূল চরিত্রের জীবন আর সম্পর্কের তলায় বয়ে চলেছে মৃত্যুস্রোত, যে নদীর কথা প্রফেসর অনির্বাণ (শাশ্বত চ্যাটার্জি) বলেছেন। ছাত্রদের সাথে এডউইন ব্রোকের লেখা “Five Ways to Kill a Man” আলোচনা করতে গিয়ে অনির্বাণ বলে “Those who are gone, are gone, – the real story lies with the people they leave behind”। পুরো সিনেমার থিম এখানেই বলা হয়ে যায়। পুরো সিনেমার মধ্যে যে একটা বুদ্ধিমত্তা আছে, একটা অ্যালিগরি আছে তা অনির্বাণের প্রতিটি উদ্ধৃতিতে প্রথম থেকেই বোঝা যায়।

তোমাদের চোখে social media ব্যাপার টা ঠিক কি রকম? পুরোনো বন্ধু খুঁজে পাওয়া, নতুন বন্ধুত্ব করে নেওয়া, আমাদের এই আসল সমাজ থেকে ছুটি নিয়ে অন্তর্জাল সামাজিক মাধ্যমে(Social Media) ছুটি খুঁজে নেওয়া? মুখ? নাকি মুখোশ? নাকি মুখোশের ফাঁকে মুখ? ওই Social media influencer ব্যাপার টা কিরকম? এই পোস্টের যোগ্যতা কি? আসল সমাজটার সাথে ওই সমাজটাকে মিলিয়ে দেওয়া যায়?

অনির্বাণ, ইংরেজির অধ্যাপক, ইরা(রাইমা সেন) , তার স্ত্রী, পেশায় রিসেপসনিস্ট, এবং বন্ধু রুদ্রাংশু (রিত্বিক চক্রবর্তী) তিন জনের মধ্যেকার সম্পর্ক, বাইরের মানুষের সাথে সমীকরণ এই সব কিছু ধরা পড়েছে কয়েকটি তারিখে। যেনো মনে হয় ফেসবুক স্মৃতি উল্টে দেখা হচ্ছে সেই। দীপঙ্কর মিত্র (কৌশিক গাঙ্গুলি) একজন ওয়ায়িল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার, তিন বছর পর 2018 সালের 26 এপ্রিল social media তে ফিরে জানতে পারে তার কাছের বন্ধু অনির্বাণ নিজের জন্ম তারিখেই মারা গেছে।

তার পরের ঘটনা, 2015 সালের 26 এপ্রিল, অনির্বাণের জন্মদিন, যখন কেউই জানতো না এই শুভ দিনটাই তার মৃত্যু দিন হয়ে আসবে।আসলে মৃত্যু যে কখন আসবে তা আমরা কেউ বুঝতে জানি না, আর এলে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু মৃত্যু তো বছরের তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের মধ্যেই এক দিন আসবে। তাই শুধু জন্ম দিনটা নয় জীবনের প্রতিটা দিন বাঁচা উচিত যাকে লাতিন ভাষায় বলে কার্পে ডিয়েম।জীবিতাবস্থায় শেষ জন্মদিনে অনির্বাণ ইরাকে একটা মেসেজ করে “পারলাম না, sorry”, যার উত্তর ইরার সাথে দর্শকও খুঁজতে থাকে। এই প্রশ্নের উত্তর পেলেই হয়তো এই ধাঁধাটার উত্তর পাওয়া যাবে। শেষ পর্যন্ত এই মেসেজের মানে খুঁজে পেয়ে ইরা কি জীবনে এগিয়ে যেতে পারবে?
শ্রেষ্ঠ চিত্র নাট্যের জন্যে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সিনেমার চিত্রনাট্য কাটাছেঁড়া করার সাধ্য আমার নেই। কিন্তু সিনেম্যাটোগ্রাফারের প্রশংসা করতেই হবে। বিশেষত লন্ডনের থেমস নদীর দিক থেকে নেওয়া ভিডিওগুলির, বা ছাদ থেকে নেওয়া রাস্তার দৃশ্যের জন্যে। ডায়ালগ খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। থিমের ক্ষেত্রে Memories in March এর ছোঁঁয়া পাওয়া যায়।
সব শেষে On M.Y. Opinion, ‘তারিখ’ is- 90% OP, 87% OK।